
LAN বলতে Local Area Network বোঝানো হয়। এই LAN দুটি পিসি থেকে শুরু করে ছোট পরিসরে অসংখ্য পিসির মধ্যে হতে পারে। শুধু পিসিই নয় LAN এ যুক্ত হতে পারে প্রিন্টার, আইপি ফোন, সার্ভারসহ IP সাপোর্ট করে এমন যেকোন ডিভাইস। আপনি এই LAN কে চাইলে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করতে পারেন অথবা শুধুমাত্র নিজেদের মধ্যে ফাইল বা কন্টেন্ট শেয়ারিং এর মধ্যেও সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন। এখন অনেকেই মাল্টিপ্লেয়ার গেমসের সাথে পরিচিত, ল্যান করে মাল্টিপ্লেয়ার গেমস খেলার মজাই আলাদা।
আসুন এবারে দেখা যাক LAN তৈরী করার জন্য আপনার কি কি জিনিষ লাগবে :
১। UTP LAN Cable (CAT6 হলে ভালো, না হলে CAT5 হলেও চলবে)।

২। RJ45 Connector (Micronet এরটা বেশ ভালো)।

৩। ক্রিমপার (Crimper)।

৪। মাদারবোর্ডের বিল্ট-ইন LAN পোর্ট অথবা LAN Card।

৫। হাব (HUB) অথবা সুইচ (Switch) [যদি দুই এর অধিক পিসির মধ্যে LAN করতে চান]।
প্রথমে ধরে নিচ্ছি আপনি দুটি পিসির ভেতরে ল্যান করবেন। সেক্ষেত্রে আপনি প্রথমে আপনার দুটি পিসির মধ্যে দূরত্ব অনুযায়ী UTP Cable কেটে নিন। UTP Cable এর সবোচ্চ দূরত্ব ১০০ মিটার। এর বেশী দূরত্ব হলে মাঝে ১০০ মিটার পরপর হাব অথবা সুইচ ব্যবহার করতে হবে। Cable এর মাপ নেয়া হয়ে গেলে ক্যাবল কাটার জন্য Crimper ব্যবহার করুন। Cable কাটার পরে কভারটি সরালেই ভেতরে আরও ৪ জোড়া চিকন ক্যাবল দেখতে পাবেন। এদের রং হচ্ছে কমলা, নীল, সবুজ, খয়েরী। এটি যদি CAT6 ক্যাবল হয় তবে এর ভেতরে বাড়তি একটি প্লাস্টিকের দন্ড থাকে।
এবার ক্যাবলের দুই প্রান্তে কানেক্টর লাগানোর পালা, 8B RJ45 Connector দুভাবে সাজিয়ে লাগানো যায়। একটি হচ্ছে T568A এবং অন্যটি T568B। নিচের চিত্রটি লক্ষ করুন।


কিন্তু আপনি যদি ভিন্ন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করেন (যেমন: পিসি টু সুইচ) সেক্ষেত্রে Straight Through Cable দিয়ে ডিভাইসগুলোকে কানেক্ট করতে হবে। অর্থাৎ তখন ক্যাবলের দুই প্রান্তের কানেক্টরেরই বিন্যাস হবে T568A অথবা T568B যেকোন এক ধরনের। নিচের চিত্রের Straight Through Cable এর উদাহরনটি লক্ষ্য করুন।

straight-through cables ব্যবহার করুন :
১। Switch to router
২। Computer to switch
৩। Computer to hub
Crossover cables ব্যবহার করুন :
১। Switch to switch
২। Switch to hub
৩। Hub to hub
৪। Router to router
৫। Computer to computer
৬। Computer to router
৮টি চিকন ক্যাবল চিত্রের মত করে সাজানো হয়ে গেলে ক্যাবলগুলোর মাথা Crimper এর সাহায্যে কেটে সমান করে নিন। এবার ধীরে যত্নসহকারে ক্যাবলগুলোকে একই সাথে কানেক্টরে ঢোকান, খেয়াল রাখবেন কানেক্টরের ভেতরে একটি ক্যাবল যেন অন্য আর একটির ওপর ওভারল্যাপ না করে। ঢোকানো হয়ে গেলে কানেক্টরের ওপর দিক থেকে তাকিয়ে দেখুন সবগুলো তার জায়গামত বসেছে কিনা এবং শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌছেছে কিনা।

যদি সবকিছু ঠিক থাকে তবে কানেক্টরটিকে Crimper এর 8B Connector ছিদ্রে বসিয়ে লিভারে চাপ দিন। কট্ করে একটি শব্দ শোনার আগ পর্যন্ত চাপ দিতে থাকুন। ব্যাস, আপনার ক্যবলে কানেক্টর লাগানো শেষ। [এপর্যন্ত এসে আপনি ল্যানের জন্য ক্যাবল তৈরী করা শিখে গেছেন এখন শুধু বাকি কম্পিউটারগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং ইন্সটলেশন। এ নিয়ে আমার লেখা পাবেন দ্বিতীয় পর্বে আগামীকাল।]
এখন আপনি যদি দুইয়ের অধিক কম্পিউটার ল্যানে যুক্ত করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাকে হাব অথবা সুইচ ব্যবহার করতে হবে। হাব এবং সুইচ দুটিই প্রায় একই কাজ করে যদিও সুইচ হাব অপেক্ষা দ্রুত এবং নিরাপদ। কিন্তু হাবের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এবং ছোট নেটওয়ার্কে হাব এবং সুইচের পারফরমেন্স প্রায় একই হওয়ায় অনেকেই এখনও হাব ব্যবহার করেন। বাজারে ৮ পোর্টের সুইচ পাওয়া যায়, DLink এর একটি ৮ পোর্টের সুইচের দাম পড়বে ১২০০/= টাকার মত। অর্থাৎ এই সুইচ দিয়ে আপনি ৮ টি পিসিকে কানেক্ট করে নেটওয়ার্ক তৈরী করতে পারবেন। এর চাইতেও বেশী কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কানেক্ট করার প্রয়োজন হলে অধিক পোর্টের সুইচ অথবা একাধিক সুইচ ব্যবহার করতে পারবেন। সুইচ ব্যবহার করে স্টার টপোলজি নেটওয়ার্কের চিত্র নিচে দেয়া হলো।

আজকে এই পর্যন্তই, পোষ্ট এমনিতেই বড় হয়ে গেছে। আগামীকাল এই সময়ে দ্বিতীয় পর্ব লিখবো, ইনশাআল্লাহ। সেখানে নেটওয়ার্ক ইন্সটল করা, ওয়ার্কগ্রুপ তৈরী, ফাইল এবং ইন্টারনেট শেয়ারিং ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
The main source of The Writings : Mahmud
Inga kommentarer:
Skicka en kommentar